শনিবার, ১ জুন, ২০১৯

ফেসবুকে বেশি বেশি লাইক ও কমেন্ট পাওয়ার উপায়।



সারকথাঃ লাইক পেতে চাওয়া খারাপ কিছু নয়। খারাপ হলো, লাইক পাওয়ার নেশায় পেয়ে বসা। এটাই মূল ভয়। বেশ কিছুদিন ধরে সামাজিক মাধ্যমের ধারা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, লাইক পাওয়ার এই আকাঙ্ক্ষা থেকে অনেকেই এমন অনেক কিছু করছেন, যা ঠিক নয়। যা হয়তো আমাদের মূল্যবোধের সঙ্গে মেলে না। আবার যা তাঁর নিজের জন্য, সমাজের জন্যও ভুল বার্তা দেয়।
আবার এ-ও ঠিক, লাইকের মাপকাঠি দিয়ে এখন সবকিছু বিচার করার প্রবণতাও তৈরি হয়েছে। এক অভিনেতা যদি অন্য অভিনেতার থেকে বেশি লাইক পান তাঁর কোনো পোস্টে; তার মানেই এমন নয়, লাইক বেশি পাওয়া অভিনেতাটিই ভালো। কারণ, দেখা গেছে, লাইকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষটির পেশার যোগসূত্র থাকলেও সেটি তত বড় নয় যে তা মাপকাঠি হয়ে উঠতে পারে; বরং সামাজিক মাধ্যমে সেই ব্যক্তিটি কী পোস্ট দিচ্ছেন, সেটিই লাইকসংখ্যাকে প্রভাবিত করে।
লাইকের কারিগরি একটি দিকও আছে। ফেসবুক কীভাবে কোন তথ্য কার কাছে পৌঁছাবে, এর একটি প্রোগ্রাম করা থাকে। ফেসবুকের এই এলগরিদম নিয়ত পাল্টায়ও। যেমন ফেসবুক এখন চায় ভিডিও ও ছবিকে বেশি গুরুত্ব দিতে। এমন অনেক নেপথ্য কারিগরি দিক আছে, যা আমরা জানি না। আবার ফেসবুকে লাইক কেন মানুষ দেয়, এ নিয়ে বেশ কিছু মনস্তাত্ত্বিক গবেষণাও কিন্তু হয়েছে।
স্ট্যাটাস বা পোস্টের ধরন
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্লেষক-ফার্ম ‘কিসমেট্রিকস’-এর ফেসবুক নিয়ে গবেষণায় কিছু চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে। ফেসবুকে ছবি পোস্ট করলে সাধারণত ৫৩ শতাংশ বেশি লাইক পাওয়া যায়। ১০৪ শতাংশ কমেন্টস ও ৮৪ শতাংশ লাইক বেশি পাওয়া যায় ছবিভিত্তিক স্ট্যাটাসে। পোস্টে লেখার ব্যাপ্তি নিয়েও কিছু পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ন্যূনতম ৮০ শব্দের মধ্যে পোস্ট দিলে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সঙ্গে ৬৬ শতাংশ সম্পৃক্ততা বাড়ে।
নিয়ম করে প্রতিদিন দু-একবার পোস্ট করলে ‘লাইক’-এর সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়বে। তবে নিরপেক্ষ পোস্টে মানুষ লাইক কম দেয়। নেতিবাচক পোস্ট কিংবা মানবিক কোনো ব্যাপারে মানুষের লাইক দেওয়ার প্রবণতা বেশি। এ ছাড়া সপ্তাহে ন্যূনতম এক থেকে চারবার পোস্ট করলে ৭১ শতাংশ বেশি সাড়া পাবেন বন্ধু কিংবা ফলোয়ারদের কাছ থেকে।
ফেসবুক ইদানীং ভিডিওকে গুরুত্ব দিচ্ছে। আপনার মুঠোফোনটিকে ব্যবহার করতে পারেন। তবে ফেসবুকের যেকোনো পোস্টের ক্ষেত্রে একটি সূত্র সব সময় মনে রাখবেন: কী পোস্ট করব, এটা একবার ভাবার সময় দশবার ভাববেন কী পোস্ট করব না।
চাই বুদ্ধির ঝিলিক
বিখ্যাত কেউ ফেসবুকে যা-ই পোস্ট করুক, তা ‘ভাইরাল’ হতে সময় লাগে না। কিন্তু আমজনতার ক্ষেত্রে এ কথা খাটে না। আম-আদমি থেকে নিজেকে আলাদা করতে হলে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে হবে একটু বুদ্ধি দিয়ে।
১. ‘লাইক’ কথাটার গুরুত্ব বুঝে লাইক দিন। প্রচলিত ধারণা হলো, ফেসবুকে জনপ্রিয় হতে সব ধরনের পোস্টে লাইক দিয়ে যাওয়া। এতে নিজের অ্যাকাউন্টেও বেশি বেশি লাইক ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা দেখেন অনেকে। কিন্তু এটা একেবারেই ভুল ধারণা। অপ্রীতিকর, বিতর্কিত কোনো পেজ কিংবা কারও পোস্টে লাইক দিলে উল্টো আপনার অ্যাকাউন্টে লাইকের সংখ্যা কমতে পারে! কেননা, মানুষ তখন ভেবে নেবে আপনার ব্যক্তিত্ব কিংবা চিন্তাচেতনায় সমস্যা আছে।
২. ফেসবুক পোস্টের ক্ষেত্রে মনে রাখা উচিত, যেটা আপনার ভালো লাগছে, সেটা আরেকজনের ভালো না-ও লাগতে পারে। এ কারণে সবকিছুই ফেসবুকে পোস্ট করা ঠিক নয়। বিরক্তিকর নয়, ব্যতিক্রমী পোস্ট করুন। মানুষ ব্যতিক্রমী যেকোনো কিছুই পছন্দ করে। সেটা হতে পারে মজা, হাসি-কান্না কিংবা যেকোনো কিছু; শুধু ব্যতিক্রমী হতে হবে।
৩. মানুষ খবর পেতে ভালোবাসে, খবর দিতেও ভালোবাসে। এখন তো যেকোনো খবর সংবাদমাধ্যমের চেয়ে ফেসবুকেই আগে পাওয়া যায়। এ কারণে বিশ্বস্ত সূত্রের নানা ধরনের খবর শেয়ার দিন। পাশাপাশি খবর নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত মতামতও লিখুন। এতে মানুষ আপনাকে আলাদা করে চিনবে, গুরুত্ব দেবে। লিখতে পারেন সাম্প্রতিক আলোচিত যেকোনো বিষয় নিয়ে। সেটা হতে পারে খেলা, রাজনীতি, সংস্কৃতি কিংবা বিনোদন জগৎ নিয়ে। তবে সামাজিক যেকোনো সমস্যা নিয়ে লেখা মানুষ পছন্দ করে।
৪. বিশেষ দিনকে বিশেষভাবে ব্যবহার করুন। ধরুন, আপনার বন্ধুর জন্মদিন। এমনিতে জন্মদিনের শুভেচ্ছা তো জানাবেনই, পারলে তাঁকে নিয়ে ব্যতিক্রমী কিছু করুন। আপনার বন্ধুর জন্মদিনে কোন কোন বিখ্যাত মানুষ জন্মেছে, তা খুঁজে বের করে মজার কিছু লিখতে পারেন। মনে রাখবেন, ফেসবুকে সৃজনশীলতার আলাদা কদর আছে।

1 টি মন্তব্য:

আলহামদুলিল্লাহ! বেশ উপযোগী ছিলো।